Saturday 14 August 2021

সম্পাদকীয়


সম্পাদকের কলমে--

কবিতা পত্রিকার সম্পাদনা কি কবিতার ভাষায় হতে হবে ? না, এমনটা নয়, কবিতা বস্তুত আমাদের বঙ্গবাসীর রক্তের মাঝেই রয়ে গেছে। একটা বয়স থাকে তখন সবার মধ্যেই অল্পবিস্তর কবিতা জন্ম নেয়, কবি কবি ভাবের উদয় হয়। ভালোবাসা কবিতার জন্ম দেয়, বিরহের মাঝে বুঝি কবিতা অঙ্কুরিত হতে থাকে। জীবনের সুখ-দুঃখ ভাব ভাবনা স্বপ্ন ব্যথা এ সবের মাঝ থেকেই কবিতা অনুভূত হয়। মনের পাতায় কত না কবিতা জন্ম নেয়, আবার সে সবের অনেক পাতা থেকেই কবিতা মুছেও যায়।  ভাবনার উথাল পাথাল, কবিতার আঁকিবুকি, কখনও বুকের ভেতর ঢেউ তোলে। বুকের ভেতর থেকে, মনের ভেতর থেকে ভাব ভাবনা টেনে এনে কবিলেখকরা কাগজে কলমে নিবদ্ধ করেন। তারপর নিজেদের লেখক কবি হিসাবে পরিচিতি বানাতে প্রচার-প্রসারে মন নিবেশ করেন। আর এভাবেই একটা কবিলেখকের জন্মের সম্ভাবনা জেগে ওঠে। একটা সময় আসে যখন কবি তার স্বীকৃতি পেতে চায়, আর কবিকুলের একত্রিত সমষ্টিগত  ভাবনাকে প্রকাশ করার জন্যই তো কবিতা, মানে সাহিত্য  পত্রিকার সৃষ্টির হয়। এভাবেই সাহিত্যের পথে চলতে চলতে সভ্যতার পদদেশ থেকে আমরা ক্রমশ উঠে আসছি পাদদেশের দিকে। 

আমাদের দ্বিমাসিক স্বরধ্বনি পত্রিকা আমাদের কবিবর্গের এক নিরলস প্রয়াস। ভালো-মন্দে গদ্য-ছন্দে আমাদের প্রকাশ। আমাদের পত্রিকায় সাধারণ কবি থেকে গুণী-মানি কবিদের উপস্থিতি বর্তমান। পত্রিকায় কবিতাগুলি আগে কিংবা পরে কবির মানবিচারে সাজানো হয়নি বরং বর্ণানুক্রমে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্তির তারিখক্রমে সাজানো হয়েছে। তাই সবার কাছে অনুরোধ, এ ব্যাপারটা এ ভাবে বিচার করতে যাবেন না, প্লিজ। 

সবশেষে অনুরোধ, একাধারে পত্রিকার কবি-লেখকবর্গই  হলেন প্রধান পাঠককুল। পাঠ করে করেই তাঁরা ক্রমশ অভিজ্ঞ সাহিত্যিক হন। তাঁদের ছত্রছায়াতেই আমাদের লেখার মাপদন্ড ক্রমশ উন্নতির দিয়ে এগিয়ে যায়।  কাজেই প্রত্যেক কবি লেখকের গোড়ার কথা হল যে তাঁরা একজন বড় পাঠক, মনোযোগী পাঠক। এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তাঁদের কাছে আমাদের বিশেষ অনুরোধ, সবাই আমাদের পত্রিকা পড়ুন, লেখক কবিদের উৎসাহ দিতে ভালো-মন্দ মন্তব্য রাখুন। তবেই না পত্রিকার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে ! পত্রিকার প্রচার প্রসার মূলত লেখক-পাঠকদের হাতেই থাকে তাই অনুরোধ অন্তত নিজের ও পত্রিকার স্বার্থে এ মত প্রচার প্রসারের বিরত থাকবেন না।   

সবশেষে সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত শেষ করছি সম্পাদকীয় কলম। 

ধন্যবাদান্তে--তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা।


সহ-সম্পাদকের কলমে--

পরিবেশ চলছে পরিবেশের মত, মানুষ চলছে মানুষের মত! লেখা কোনদিন থামেনি লেখা চলছে। আমাদের চারপাশে কত কি হচ্ছে আর কত কি না ঘটছে। পরিবেশ পরিবেশের মত, মানুষ মানুষের মতো। কোন কিছুই থেমে থাকছে না ! তেমন ভাবে লেখাও থেমে নেই, চলছে। বিভিন্ন জনে বিভিন্ন রকম লেখা পরিবেশন করছেন। আমরাও পাচ্ছি ভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন লেখা। তুলে ধরছি সেগুলো আমাদের পত্রিকার পাতায়। আপনারা আপনাদের সুনির্দিষ্ট মতামত তুলে ধরুন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করবো সেটা তুলে ধরতে।

--শমিত কর্মকার, সহসম্পাদক, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা। 


সহ-সম্পাদকীয় কলম-- 

"আবৃত্তি সর্বশ্রাস্ত্রানাম বোধোদপি গরীয়সী" কথাটা সত্যিই, যে কোন বিষয় মনে রাখার জন্য ছন্দবদ্ধ উচ্চারণের কোন তুলনা হয় না। হবে নাই বা কেন, ছন্দ কোথায় নেই ! এই যে বিশ্বপ্রকৃতি যার উপর নিরন্তর আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে মানুষ, সেই প্রকৃতিও তো ছন্দে বাঁধা। ছয়টি ঋতুর নিজস্ব ছন্দে পর্যায়ক্রমিক আবর্তনেই আসে অসহনীয় গ্রীষ্ম, প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে বর্ষার জুড়ি মেলা ভার। আর ঐ যে বলছিলাম না, ছন্দের কথা--মন দিয়ে শুনলে বৃষ্টির শব্দেও খুঁজে পাওয়া যায় ছন্দের রেশ। বর্ষায় অঝোর বৃষ্টি-ধারায় সিক্ত মন বিরহী হয়ে ওঠে আর বিরহী মন তখন কোন একটা অবলম্বনকে ধরে থাকতে চায় ! মনের অগোচরে বুকের মধ্যে তখন এক এক করে জমা হয় কত গান কত কবিতা ! সে কবিতাও তো যেমন তেমন নয়, এক একটি কবিতা যেন এক একটি গল্পের কথা শোনায় আর বর্ষার আবহে বৃষ্টিমাখা সেই কবিতা গুলোই যখন এসে জমা হয় এই ঝাঁপির মধ্যে, উথলে ওঠা ভালোবাসায় ঋদ্ধ হয়ে উঠি সকলে, পূর্ণতার আনন্দে আপ্লুত হই একই সাথে।

--সাবিত্রী দাস, সহ-সম্পাদিকা, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা।


অঞ্জলি চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা--১ দুঃখ কথা ২ অন্য রঙে ৩ বাড়ি ভাড়ি

 




অঞ্জলি চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা--

 

দুঃখ কথা

--------‐---

    

আমি কিভাবে তোমাকে দুঃখ             

দিতেপারি ?

দুঃখের পরিখা কেটে ঘিরে রাখি

                          আপন অন্দর।

বাইরে সহাস্য মুখ, অভিনয়ে

                       কুড়াই হাততালি

মেকাপের বাক্স হাসে আয়না টেবিল।


আমরা তো বেঁচে থাকি যে যার মতন,

ছড়ানো মাটিতে দুঃখ ,পায় পায়ে -- আসে।

আমি কি ভাবে তোমাকে দুঃখ দিতে পারি ?

সব কিছু বিলোবার পরে ,অবশিষ্টটুকু-

শুধুই আমার--

অবহেলা কিংবা দুঃখ কথা

                             

অন্য রঙে

 

তোমার জন্যেই আমার এতবার জন্ম নেওয়া।

বারবার আসি পুরোনো গাছের নীচে,

যেখানে আমরা একদিন কতদিন --

দিন থেকে না-হিসেবী সময় কেটে গেছে।

যেদিন আমার মন ছিঁড়ে তুমি ঘোমটা 

বানালে 

সেদিনও এ গাছ , আকাশ, দুচোখ কেঁদে ছিল।

আজও দাঁড়াই এসে যদি তুমি বলো,

তুমি ভালো আছো ? 

আমারই ভালোবাসা নিয়ে  

অন্য রঙে  সাজিয়েছ নতুন  পৃথিবী।

                              

বাড়ি ভাড়ি


বাড়িটার ভাড়া কত ? হাজার চারেক ?

বেশিদিন থাকবো না, দিনটা কয়েক।

পেশাটা? চলে যায় ভাতে ডালে মাছে,

এ ছাড়াও অন্য কিছু নেশাটেশা আছে।

নেশার তো নাম নেই কুড়োনো অক্ষর,

তাই দিয়ে আঁকি বুকি খাতার ওপর।

আত্মীয় বেশি নেই আমি আর মন,

ভালো মন্দে সুখে আমরা দুজন ।

যদি বল তুমি আমাদেরই লোক--

তবে তো মজার দেশে যাবই যা হোক।


যাই হোক বল দেখি ভাড়া কত হবে ?

শেষবার পকেটেতে হাত রাখি তবে।

 

  


Friday 6 August 2021

ঊশ্রী মন্ডল--রামধনুর রঙ

 


 

রামধনুর রঙ

ঊশ্রী মন্ডল


ওই সপ্তষিমন্ডলের ঋষির মতো...

আমরা বিরাজিত হই সূর্যের উজ্জ্বল আলোকে ,

সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে আমরা একত্রে থাকি সাতজন সাত রং |

সূর্যরশ্মি ও রামধেনুর রঙিনছটায় ..

চিরকালীন সৌন্দর্যের অপূর্ব এক অসাধারণ প্রতিফলনে ,

রঙের খেলার মাধ্যমে সৃষ্ট রঙে আমরা হই  দৃষ্টিনন্দন ll


মানব চরিত্র ও মানসিকতা...

আমাদের বহু রং দ্বারাই হয় পরিচালিত ,

এক বিরল অভিজ্ঞতা রামধেনু রূপে করি প্রদান  l 

প্রকৃতপক্ষে আমরাই গ্রহজগতের সাথে..

পার্থিব জগতের এক আশ্চর্য সেতুবন্ধন ঘটাই ,

এই সেতুবন্ধনই মানব জীবন শাসন রূপে করে গ্রহণ  ll


আমরাই সূর্যালোকের অন্তস্থিত  নানান..

রঙরূপে জীবনকে চালনার বার্তা ঘোষনা করি,

 লাল নীল সবুজ হলুদ গেরুয়া কমলা ও বেগুনি l

লালে লাল হয়ে বলি..

হও সাহসী, জীবনকে করো পরিপূর্ণ উপভোগ,

 হও অনুভূতিসম্পন্ন স্পষ্টবাদী তেজস্বি  গৌরবান্বিত

যশকারক ও পরাক্রমী  ll


নীল রূপে আমি এসে ..

সাধারণ থেকে অসাধারণ মাঝারি থেকে কঠোর  -

কাজে পরিশ্রমী হয়ে নিজেই নিজের কর্তব্যে উদ্যোগী হলাম l

আমি সবুজ তোমাদের বলছি..

আশার প্রতীক,নতুন জীবন শক্তিরও প্রতীক,

উর্বরতা বৃদ্ধির করেই শান্তি ও বিশ্রামের রূপ নিলাম  ll


আমি আবার বেগুনি হয়ে..

সর্বদা হাসি ও খুশির মনোভাব নিয়ে,

সমাজের সর্বস্তরে নিজের শুভ চিন্তনকে ছড়িয়ে দিলাম ll

আমি গেরুয়া বলছি তোমায়..

ত্যাগ জ্ঞান শৌর্য্য ও সেবার কথা করি বর্ণিত,

অপরের চোখে স্বার্থপর হলেও  নিজেরই পথ সঠিক বললাম   ll


আমি হলুদ রং এলাম..

জ্ঞান বিদ্যা সুখশান্তি বিবেকের ধনী হয়ে ,

একাগ্রতা এবং মানসিক বৌদ্ধিক উন্নতিকল্পে নতুন চিন্তাধারা আনলাম l

আবারও কমলা রং হয়ে..

সামাজিক ভাবে সকলকে নিয়ে চলার প্রচেষ্টায়,

ত্যাগ রূপে জ্ঞানপিপাসু হয়ে গাম্ভীর্যপূর্ণ  চালচলনে প্রকাশ হলাম ll


আবার কখনো কখনো আমরাই..

দুতিনজনা মিলে অদম্য আগ্রহে মিলিয়ে মিশিয়ে,

রামধেনুর এই সাতটি রঙের বাইরেও নতুন সমাহার আনলাম l

এক থেকে অনেক রঙে..

প্রকৃতি,জীবজগৎ ও অচেৎ বস্তুকে রাঙিয়ে ,

ঈশ্বরের বহিঃপ্রকাশ ও মহাকর্ষের প্রতীকীরূপে ধরাধামে অবতীর্ণ হলাম  ll


মাথুর দাস--ফ্ল্যাটের পাড়া

             




ফ্ল্যাটের পাড়া

মাথুর দাস

 

পাশাপাশি ঘর গা-ঘেঁষাঘেঁষি কোথাও বা ছাড়া-ছাড়া,

এখানে সেখানে এভাবেই কত জমাট ছিল যে পাড়া !

ভাবসাব ছিল বিস্তর আবার কখনও ঝগড়াঝাঁটি,

হোক না ক্ষণিক তাও তো ছিল সম্পর্ক পরিপাটি ।

 

বিপদ আপদে উৎসব আচারে আচরণ ছিল বেশ,

কালের নিয়মে স্বার্থের কাছে সৌহার্দ্য হারালো রেশ ;

এখন পাড়ায় কে কাকে হারায় এমনই জেদাজেদি,

ঝগড়াঝাঁটিতে হাজারো পার্টিতে বেড়েছে ভেদাভেদই ।

 

বিস্তীর্ণ মাঠ হয়ে আঁটসাঁট উঠেছে উপরে উপর-ই,

পাড়াগুলি সব গুটিসুটি মেরে বহুতল ফ্ল্যাট-খুপরি ;

পাশাপাশি বাসে কলহেই যারা জীবন কাটালো মিছে,

ফ্ল্যাটে এসে ভাবো কী করে তারা থাকবে উপরে-নীচে ?

 

খোলা হাওয়াটুকু ঘোলা মেরে থাকে মাপা বাক্সের খাপে,

চাপা হাসি ঠোঁটে শুকনোই ফোটে স্কোয়্যার-ফুটের মাপে ;

হিংসা ও দ্বেষে মিছে ভালবেসে হাওয়ারই বাড়িগুলি

স্বার্থ-গর্বের ফোলানো বেলুনে যেন রংচঙে রঙ্গোলি ।

 

****************************************

মাথুর দাস, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ 

****************************************


তৈমুর খানের তিনটি কবিতা-- ১ নশ্বর কথারা ২ সমস্যা ৩ অপমান




তৈমুর খানের তিনটি কবিতা--


নশ্বর কথারা


নশ্বর কথারা প্রতিদিন ঝরে পড়ছে 

কথাদের আলোর বাজারে 

দুর্মুখ বিহ্বল আমি 

প্রত্যহ ধাঁধায় ফিরে আসি 


যেসব ভালোবাসাগুলি প্রকাশ হয় 

অথবা চুম্বনগুলি মেঘের মতো 

বৃষ্টি ও রোদে মাখামাখি 

তাদের দেখে নিই 

আর স্নেহের প্রকাশে 

অথবা মরমি কান্নায় সচকিত হই 

কথাদের মনে হয় যুবক-যুবতী 

যৌবন আকাঙ্ক্ষার নিগূঢ় প্রাচূর্যে 

আভাসিত 

অথবা ক্লান্তিহীন স্বর্গীয় বিভাস 


চারিপাশ জুড়ে কথা 

কথারা প্রজাপতি 

কল্পনার ঘরদুয়ার জুড়ে তাদের খেলা 

সামাজিক শাসনে প্রত্যয়দণ্ড 

কখনো কখনো বিদ্রোহ 


রোজ ভিজে যাই 

উষ্ণ হই 

নীরবতায় জাগরণে কথারা যাওয়া আসা করে 


রাত হয়ে যায় 

বুঝি না কথাদের 

কোনো এক গূঢ় ছলনায় তাদের বসতি ।


২ 

সমস্যা


সমস্যা এসেছে আজ 


আমার নির্বাক জিজ্ঞাসায় তাদের আনাগোনা :

কী চাও? কী নেবে আর? 


ধ্বংস ছুঁড়ে দিচ্ছ শুধু 

নিরশ্রু কান্নার ভেতর নিরন্তর অগ্নিমাছ! 



আমি নিরীহ প্রজ্ঞার কাছে ছায়া টেনে নিই 
নিজেকে ঢেকে রাখি নিস্তব্ধতায় 
যুগের আলোরা প্রতারক 

একটিও প্রদীপ নেই স্বপ্নে জ্বালাবার 


হাওয়া আসছে তবু, ঘর ও বাহিরে হুড়োহুড়ি 

পোশাক বদলের সময়ও দিচ্ছে না 

পিপাসার কারুণ্য ভরা গ্লাসে অবাস্তব সময়ের ঢেউ 

বলতেও দিচ্ছে না কিছু, চারিপাশে জমছে না-বলা 


সমস্যার নতুন মুখ —রক্ত নাকি আলতা পরেছে? 

পা নেই ওর —কথা কাটাকাটি শুধু 

কথা কেটে কেটে তাড়াচ্ছে ঘুম 

রাত জেগে জেগে উদ্বেগে আছে বিশ্বাস 


অপমান


অপমান খুব আনন্দে আছে 


বাক্যবাণ সুতীক্ষ্ণ ওর 

প্রাচীন পদ্ধতির আস্ফালন 


সপাঠ ক্রিয়াগুলি দুর্বিনীত, অন্ধ প্রাবল্যে আসীন 


সত্যকে কী করে ডাকব আজ? 
সত্য মৃত, মৃতকে চেনে না সমাজ। 
মিথ্যার কূপ খুঁড়ে প্রহর গুনে গুনে 

চেয়ে আছে উন্মুখ ভ্রান্ত কৃষক 


অপমান কারও কেউ নয় 

কোনও অপার্থিব রুচিও তাদের নেই 

শুধু বিষণ্ণ খাদের কাছে এনে 

ফেলে দিতে চায় নিচে, সে অনেক নিচে 


যদিও দাঁড়াই ঘুরে, যদিও যুক্তিকে ডাকি 

তবু দেখি যুক্তি নেই, মুক্তিও ঘুমাচ্ছে খাঁচায় 

সে-ও তবে কারও পোষাপাখি? 

অপমান আনন্দে আছে, মুখে তার কী সুন্দর তীব্র চুনকালি! 

 



চন্দ্র নাথ বসু,--তোমার চিন্তার শেষ নেই

 


চন্দ্র নাথ বসু

তোমার চিন্তার শেষ নেই 



কৌস্তুভ দে সরকারের একগুচ্ছ কবিতা--আষাঢ়ে প্রেমের গল্প



কৌস্তুভ দে সরকারের একগুচ্ছ কবিতা--  


আষাঢ়ে প্রেমের গল্প


আষাড়ী পূর্ণিমা

ছাদের মাঠেই ঘুমা


জ্যোৎস্নাভেজা ছাদ

অদ্ভুত আহ্লাদ


সঙ্গে মৃদু হাওয়া

হরিণ ছুঁতে চাওয়া


চাওয়ার ক্ষেত্রে আলো

চোখেই চমকালো


চোখ ভরালো যেই

শূন্যতা আর নেই


পরিপূর্ণ আলো

দিঘির বুকে জ্বালো


শান্ত এমন দিঘি

আজকেই জেনে নিবি


নেবার কথাই ভাবি

জলকে কোথায় যাবি


জলের কুমির কই

সমুদ্র যে অথই


থই পেলে কোন দ্বীপ

আকাশ পরে টিপ


টিপের এমন গুণ

আষাড় মাসে আগুন


আগুন পাখা মেলে

যায় ছুটে অবহেলে


ছুটে যা তেপান্তরে

অন্তরে অন্তরে


অনন্ত পথে যদি

ছুট হত নিরবধি


এইস্থির রাত্রিতে

নদীটিতে বাঁধ দিতে


দিতে তো হবেই সব

যদি ওঠে কলরব


কলরব কোলাহল

চাঁদে কেন নেই বল


চাঁদে আছে রূপকথা

আলোতেই চুপ কথা


আলোয় আলোয় মিলে

কতকিছু দিয়ে দিলে


দিয়েছ পরম পাওয়া

পথ ভুলে কেন যাওয়া


এই পথে এই দিকে

জীবনের মানেটিকে


মেনে নেবো তোমাতেই

তুমিও তো আমাতেই


মিশে আছো মিশে থাকো

নদী বলে যদি ডাকো


নদী পাড়ে জ্যোস্নাতে

প্রকৃতি যেমন মাতে


আলো জল বাতাসের

আছে ভালোবাসা ঢের


এইখানে সব পাবে

মিলবে ও মেলাবে


এসো আরো কাছে এসো

আজীবন ভালোবেসো

আজীবন ভালোবেসো


সপ্তপদী / কৌস্তুভ দে সরকার 

-----------------------------------------


দুঃখের নিমিত্ত জন্যকে ডাকি  

ফেবুর লকেট খুলে রাখি

তুমি কেন আলকাতরা ভাবো

আমি কি ঈষদুষ্ণ ভাবে থাকি


২)


পৃথিবীতে যন্ত্রণা অতি ঘোর 

তাই চামড়াতে চড়ালাম গান 

আমি কারো মতো নই সিগারেট খোর

দুঃখের কথা ব্র্যাকেটের পাশে আনচান   


৩)


প্রচণ্ড ভালোবাসি

সে সুযোগ নিচ্ছ বারবার

সুযোগ পেলেই তুমি পটু হয়ে যাও

পাখিদের মতন  আমাদের ইকিড়-মিকিড়ি সংসার


৪)


ডানাকাটা বলতে কি বোঝ ? 

বললে তো আগুনও ক্রীতদাস

বলা  প্রায় একেকটা  ভোর  

অসংখ্য বলার ভেতর

আমাদের ফুচকা-মহারানি বসবাস 


৫)


পাক খাচ্ছে ডালিমের হাওয়া

নাভির ভেতর শিরদাঁড়া

ফুঁড়ে যাচ্ছে, উড়ে যাচ্ছে হাঁস

নির্ঘুম রাতের কড়ানাড়া 

 

৬)


দাগ টানলেও সীতা যে পালায় 

চুরি করে নিয়ে যায় চোর

আমাদের হিজিবিজি পাঠ

বিপর্যস্ত ওঁ সূর্যমন্তর 

 

৭)


বদলে নেওয়ার নাম ঘুম

ঘূন কাটে ধূম পড়ে দুরুহ দুস্তর

পারাপারগুলি বেজে ওঠে

আহত পাখির খুব জ্বর

 




সম্পাদকীয়

সম্পাদকের কলমে-- কবিতা পত্রিকার সম্পাদনা কি কবিতার ভাষায় হতে হবে ? না, এমনটা নয়, কবিতা বস্তুত আমাদের বঙ্গবাসীর রক্তের মাঝেই রয়ে গেছে। একট...