সম্পাদকের কলমে--
কবিতা পত্রিকার সম্পাদনা কি কবিতার ভাষায় হতে হবে ? না, এমনটা নয়, কবিতা বস্তুত আমাদের বঙ্গবাসীর রক্তের মাঝেই রয়ে গেছে। একটা বয়স থাকে তখন সবার মধ্যেই অল্পবিস্তর কবিতা জন্ম নেয়, কবি কবি ভাবের উদয় হয়। ভালোবাসা কবিতার জন্ম দেয়, বিরহের মাঝে বুঝি কবিতা অঙ্কুরিত হতে থাকে। জীবনের সুখ-দুঃখ ভাব ভাবনা স্বপ্ন ব্যথা এ সবের মাঝ থেকেই কবিতা অনুভূত হয়। মনের পাতায় কত না কবিতা জন্ম নেয়, আবার সে সবের অনেক পাতা থেকেই কবিতা মুছেও যায়। ভাবনার উথাল পাথাল, কবিতার আঁকিবুকি, কখনও বুকের ভেতর ঢেউ তোলে। বুকের ভেতর থেকে, মনের ভেতর থেকে ভাব ভাবনা টেনে এনে কবিলেখকরা কাগজে কলমে নিবদ্ধ করেন। তারপর নিজেদের লেখক কবি হিসাবে পরিচিতি বানাতে প্রচার-প্রসারে মন নিবেশ করেন। আর এভাবেই একটা কবিলেখকের জন্মের সম্ভাবনা জেগে ওঠে। একটা সময় আসে যখন কবি তার স্বীকৃতি পেতে চায়, আর কবিকুলের একত্রিত সমষ্টিগত ভাবনাকে প্রকাশ করার জন্যই তো কবিতা, মানে সাহিত্য পত্রিকার সৃষ্টির হয়। এভাবেই সাহিত্যের পথে চলতে চলতে সভ্যতার পদদেশ থেকে আমরা ক্রমশ উঠে আসছি পাদদেশের দিকে।
আমাদের দ্বিমাসিক স্বরধ্বনি পত্রিকা আমাদের কবিবর্গের এক নিরলস প্রয়াস। ভালো-মন্দে গদ্য-ছন্দে আমাদের প্রকাশ। আমাদের পত্রিকায় সাধারণ কবি থেকে গুণী-মানি কবিদের উপস্থিতি বর্তমান। পত্রিকায় কবিতাগুলি আগে কিংবা পরে কবির মানবিচারে সাজানো হয়নি বরং বর্ণানুক্রমে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্তির তারিখক্রমে সাজানো হয়েছে। তাই সবার কাছে অনুরোধ, এ ব্যাপারটা এ ভাবে বিচার করতে যাবেন না, প্লিজ।
সবশেষে অনুরোধ, একাধারে পত্রিকার কবি-লেখকবর্গই হলেন প্রধান পাঠককুল। পাঠ করে করেই তাঁরা ক্রমশ অভিজ্ঞ সাহিত্যিক হন। তাঁদের ছত্রছায়াতেই আমাদের লেখার মাপদন্ড ক্রমশ উন্নতির দিয়ে এগিয়ে যায়। কাজেই প্রত্যেক কবি লেখকের গোড়ার কথা হল যে তাঁরা একজন বড় পাঠক, মনোযোগী পাঠক। এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তাঁদের কাছে আমাদের বিশেষ অনুরোধ, সবাই আমাদের পত্রিকা পড়ুন, লেখক কবিদের উৎসাহ দিতে ভালো-মন্দ মন্তব্য রাখুন। তবেই না পত্রিকার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে ! পত্রিকার প্রচার প্রসার মূলত লেখক-পাঠকদের হাতেই থাকে তাই অনুরোধ অন্তত নিজের ও পত্রিকার স্বার্থে এ মত প্রচার প্রসারের বিরত থাকবেন না।
সবশেষে সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত শেষ করছি সম্পাদকীয় কলম।
ধন্যবাদান্তে--তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা।
সহ-সম্পাদকের কলমে--
পরিবেশ চলছে পরিবেশের মত, মানুষ চলছে মানুষের মত! লেখা কোনদিন থামেনি লেখা চলছে। আমাদের চারপাশে কত কি হচ্ছে আর কত কি না ঘটছে। পরিবেশ পরিবেশের মত, মানুষ মানুষের মতো। কোন কিছুই থেমে থাকছে না ! তেমন ভাবে লেখাও থেমে নেই, চলছে। বিভিন্ন জনে বিভিন্ন রকম লেখা পরিবেশন করছেন। আমরাও পাচ্ছি ভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন লেখা। তুলে ধরছি সেগুলো আমাদের পত্রিকার পাতায়। আপনারা আপনাদের সুনির্দিষ্ট মতামত তুলে ধরুন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করবো সেটা তুলে ধরতে।
--শমিত কর্মকার, সহসম্পাদক, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা।
সহ-সম্পাদকীয় কলম--
"আবৃত্তি সর্বশ্রাস্ত্রানাম বোধোদপি গরীয়সী" কথাটা সত্যিই, যে কোন বিষয় মনে রাখার জন্য ছন্দবদ্ধ উচ্চারণের কোন তুলনা হয় না। হবে নাই বা কেন, ছন্দ কোথায় নেই ! এই যে বিশ্বপ্রকৃতি যার উপর নিরন্তর আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে মানুষ, সেই প্রকৃতিও তো ছন্দে বাঁধা। ছয়টি ঋতুর নিজস্ব ছন্দে পর্যায়ক্রমিক আবর্তনেই আসে অসহনীয় গ্রীষ্ম, প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে বর্ষার জুড়ি মেলা ভার। আর ঐ যে বলছিলাম না, ছন্দের কথা--মন দিয়ে শুনলে বৃষ্টির শব্দেও খুঁজে পাওয়া যায় ছন্দের রেশ। বর্ষায় অঝোর বৃষ্টি-ধারায় সিক্ত মন বিরহী হয়ে ওঠে আর বিরহী মন তখন কোন একটা অবলম্বনকে ধরে থাকতে চায় ! মনের অগোচরে বুকের মধ্যে তখন এক এক করে জমা হয় কত গান কত কবিতা ! সে কবিতাও তো যেমন তেমন নয়, এক একটি কবিতা যেন এক একটি গল্পের কথা শোনায় আর বর্ষার আবহে বৃষ্টিমাখা সেই কবিতা গুলোই যখন এসে জমা হয় এই ঝাঁপির মধ্যে, উথলে ওঠা ভালোবাসায় ঋদ্ধ হয়ে উঠি সকলে, পূর্ণতার আনন্দে আপ্লুত হই একই সাথে।
--সাবিত্রী দাস, সহ-সম্পাদিকা, স্বরধ্বনি ব্লগ ও ই-পত্রিকা।